‘ভাল্লাগেনা’ রোগ হয়েছে আমাদের। কয়েক ক্রোশ নাঙ্গা পায়ে হেঁটে, রোদে তেতে, ঘামে নেয়ে কিছু পেতে হয়না। পঁচিশ পয়সার লেবেঞ্চুস, পাইপ আইসক্রিম কিনতে মায়ের কাছ থেকে এক মুঠো চাল কিংবা পুরোনো টিনের বোতল নিতে গিয়ে ঘ্যানঘ্যান করে মাটিতে গড়াগড়ি দিতে হয়না আর। লম্বা বাঁশ দিয়ে এন্টেনাতে বাড়ি দিয়ে ঝিরঝিরে সাদা-কালো দেখতে হয় না। ফ্যান, এসি, টিভি তাবৎ চলে আঙুলের ইশারায়। নিজের জায়গা থেকে এক চুল নড়ি না আমরা। নিজের ভাবনা থেকে আধা চুল সরি না আমরা।
রেস্তোরাঁয় হরেক পদের মেন্যু কার্ড সামনে নিয়ে, কানে এয়ারপড দিয়ে, চেয়ারে কয়েক ইঞ্চি ডুবে-ডেবে গিয়ে ফোনে চকাচক করে যাই স্ক্রল। আনন্দের কতটি মাত্রা এক হল? চোখ মেললেই নরম আলো, বাতাসে মৃদু সুবাস। নোটিফিকেশনে ভাসছে, ‘why are you so pretty!!???’; পপ আপ, ‘শেয়ার দিলাম, ভাই’। বিনোদন কেমন বিচিত্রতর হল?
রেস্টুরেন্ট থেকে রাস্তায় নেমেই তবু ভাল্লাগে না। আমাদের গভীর পীড়া। আমরা অসুস্থ। আমাদের কিছুতে টানে না, আমাদের কিছু ভাবায় না। আমরা লোকজন দেখি, নিজেকে দেখি না। আমরা প্রতিবিম্ব দেখি, হৃদয় দেখি না। না পাওয়ার হাহাকারে ভর্তি 24*7, পাওয়ার তৃপ্তি করিনা।আমরা সবুজ দেখিনা, নিদেনপক্ষে ব্যাংকক কিংবা বালি দেখি।অক্সিজেন, সূর্য, ঘাসফুল, সেজবাতি চলে গেছে ব্লাইন্ড স্পটে।
আমাদের চোখ কিছুতে জুড়ায় না, কেবল পোড়ায়।
লং ড্রাইভ, মাস্তি, আড্ডা, গাঞ্জা,
ব্লুটুথ, অপ্পো, লেইকভিউ, হোমথিয়েটার
জীবনের ব্যটারিতে শতভাগ সাবস্ক্রাইব করে
শুনশান হাওয়ায় ঘরে ফেরা
ফ্রিজ খুলে ঠান্ডা বোতল হাতেই
শুরু হয়ে যায় ‘ভাল্লাগে না’।
জীবনে ফান বলে কিছু নেই
বোরিং লাইফ, ভাল্লাগে না।