এক ভদ্রলোকের প্রতিদিনকার দায়িত্ব ছিল শিপমেন্টের জন্য এয়ারটাইট লকারগুলো প্রস্তুত করা। লকারে পণ্য লোড করার পর তিনি সীল করে দিলে সেগুলো ট্রেন বা জাহাজে করে পরিবহন করা হতো। একদিন একটা লকারের ভিতর ভুল করে নিজেকেই লক করে ফেলেন তিনি। কিছুক্ষণ পরই ট্রেন চলতে শুরু করলো। ভদ্রলোক ২০ বছর ধরে একই কাজ করেছেন, অনেক ঘটনা নিজের চোখে দেখা। তিনি জানতেন, চিৎকার করে কোন লাভ নেই। লকারের সীমিত অক্সিজেনে যে আর মাত্র কয়েক ঘন্টা বেঁচে থাকবে্ন, তাও বুঝতে পারছিলেন তিনি।তবু কিছুক্ষণ ধাক্কা-ধাক্কি করে পরে হাল ছেড়ে দিলেন। পিঠের ব্যাগ থেকে টর্চ বের করে সেই আলোয় স্ত্রী-সন্তানের জন্য মৃত্যুর আগে চিঠি লিখে গেলেন তিনি।
দু’দিন পর লকারে তার মৃতদেহ খুঁজে পাওয়া গেলো।চিঠির শুরুতে তিনি স্ত্রী-সন্তানের প্রতি তার স্নেহ-ভালবাসার কথা জানান। পরের দিকের কথাগুলো ছিল অর্থহীন, সামঞ্জস্যহীন। চিঠির শেষে ছিল অদ্ভুত সব আঁকাআঁকি।ময়না তদন্তে জানা গিয়েছিল, অক্সিজেনের অভাবেই মারা গিয়েছিলেন তিনি। তার চিঠিতেও ফুটে উঠেছিল মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ক্রমশঃ অভাবে ভোগা একজন মানুষের উপসর্গ।
ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস, লকার অনুসন্ধান করে দেখা গেলো, পেছনের দেয়ালের মাঝামাঝি থেকে মেঝে পর্যন্ত নেমে এসেছে একটি ফাটল যা দিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই লকারের ভেতরে বাতাস ঢুকছিল!ভদ্রলোকের চিন্তাই তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছিলো। তিনি যেমন বিশ্বাস করেছিলেন, সেইমতই মস্তিষ্ক তার শরীরকে ট্রিক করেছিল।
এর উল্টো ঘটনাও দেখা গেছে। নতুন কোন ঔষধের প্রভাব যখন রোগীর শরীরে পরীক্ষা করা হয়, সেই পরীক্ষার জন্য তাদের দুটি দলে ভাগ করা হয়। এক দল মানুষ ঔষধ খাবে ও তারপর তাদের রেসপন্স পরীক্ষা করে দেখা হবে। আরেকদল মানুষও ঠিক একই পরীক্ষার ভেতর দিয়ে যাবে, পার্থক্য হচ্ছে ওরা ঔষধ খাচ্ছে জানলেও ওদেরকে আসলে ঔষধের মতো দেখতে ও খেতে অন্য কিছু দেয়া হবে, যাকে বলে প্লাসেবো। মজার ব্যাপার, প্লাসেবো দলের অনেক রোগীরই অবস্থার উন্নতি হয়। আরো মজার ব্যাপার, এদের কেউ কেউ ঔষধের নানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ব্যাপারেও অভিযোগ করেন।
ভুডু, তাবিজ, হোমিওপ্যাথিসহ আরো অনেক কিছুই এভাবে কাজ করে।
বিশ্বাসে মেলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর!
এভাবে ট্রিক করে আমাদের ভেতর থেকে নেতিবাচক চিন্তাগুলোকে তাড়িয়ে দিলে কেমন হয়?